
ফিটনেসবিহীন লক্কর ঝক্কর গাড়ির রাজত্ব রাজধানীতে
রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাসগুলোর প্রায় এক হাজার বাসের নেই ফিটনেস। কোনটার জানালা ভাঙা কোনটার দরজা ভাঙা। আবার কোনো কোনো বাসের সামনে পিছনে দুইদিকেই লক্কড়-ঝক্কড় বাস দিনের পর দিন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজপথ। রাজধানীর রাস্তায় ফিটনেসবিহীন এসব বাস একটি আরেকটির সাথে আঁচড় দিয়ে চলছে নিয়মিত। এই আঁচড়ে চিহ্ন লেগে আছে বাসের গায়ে। এসব বাসের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও লাইসেন্সবিহীন চালকের হাতে রয়েছে শত শত গাড়ির স্টিয়ারিং। রাজধানীতে বিভিন্ন রুটে চলাচলরত টেম্পোর চিত্রও একই। মহাসড়কে চলাচলকারী অধিকাংশ গাড়ির নেই ডিজিটাল নম্বর প্লেট। এসব নানা কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঝরছে তাজা প্রাণ। পঙ্গু হচ্ছে অনেকে।
এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরে চলাচলরত যানবাহনগুলো ক্রটিমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন না হলে, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল শুক্রবার বিআরটিএর সদর কার্যালয়ের এক জরুরি গণবিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গণপরিবহনের সৌন্দর্যের ওপর নগরের সৌন্দর্য ও দেশের ভাবমূর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু বাস-মিনিবাসের রঙচটা, জরাজীর্ণ, জানালা-দরজার কাঁচ ভাঙা, সামনে-পেছনের লাইট ভাঙা।
তবে এ বিষয়ে সেভ দ্য রোড জানায়, চলমান সময়ে সড়ক পথ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ফিটনেসহীন বাহন যার পরিমাণ সেভ দ্য রোডের গবেষণা সেল ও সেচ্ছাসেবীদের মতে ৩৬ শতাংশ। বিআরটিএ চাইলে এর পরিমাণ আশানুরূপ কমিয়ে ফেলতে পারতো। এই অভিযান মালিক সমিতির কাছ থেকে তাদের বাস ডিপো অথবা বাস রাখার যে স্থানগুলো রয়েছে তা সংগ্রহ করে সেখানে গিয়ে অভিযানটি পরিচালনা করে। সেভ দ্য রোডের পক্ষ থেকে একটি দাবী, ফিটনেসলেস বাহনগুলোকে যেন কোনভাবেই আর মালিক পক্ষ ব্যবহার করতে না পারে সেদিক বিবেচনা করে সেগুলোকে স্থায়ীভাবে অচল করে দেয়া হয়। সর্বোপরি কোনভাবেই যেন বিআরটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী বা সংশ্লিষ্ট কেউ মালিকদের সাথে আঁতাত করে এই প্রক্রিয়াটি অকার্যকর করে দিতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও দুদকের।
রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন রুটে কালো ধোঁয়া উড়িয়ে বেপরোয়াভাবে চলছে পুরনো বাস। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই এসব গণপরিবহণ চললেও তারা নীরব। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব বাস থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত চাঁদা নেয়ায় বাসগুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। সড়কে এসব লক্কড়-ঝক্কড় বাস বেপরোয়া। তবে সড়কে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্দশায় পড়তে হয়। বিশেষ করে ফ্লাইওভারে এসব বাস আটকে গেলে মূহূর্তেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
You must log in to post a comment.