
ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর ঘটনায় শঙ্কা বাড়ছে
চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর ঘটনায় শঙ্কা বাড়ছে। গত দুই বছরের রেকর্ড ভেঙে এ বছর ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। আক্রান্ত হওয়ার পরে দেরি করে হাসপাতালে আসাকে রোগী মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দায়ী করছেন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আগে থেকে জটিল দুরারোগ্য ব্যাধি থাকলে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানান তারা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫০ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৭১৬ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৯ হাজার ৪৬৬ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩ হাজার ৪১৬ জন।
সরকারের এই তালিকাভুক্ত হাসপাতালের বাইরে অন্য হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য থেকে যাচ্ছে হিসাবের বাইরে। এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে মারা যাওয়া ১১৮ জনের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন ১২ জন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে মারা গেছেন ১১ জন, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ১০ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে একজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে তিনজন মারা গেছেন। ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন, ইবনে সিনা হাসপাতালে চারজন, স্কয়ার হাসপাতালে পাঁচজন, শমরিতা হাসপাতালে একজন, ডেল্টা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে চারজন, গ্রিন লাইফ হাসপাতালে তিনজন, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে দুজন মারা গেছেন। শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিআরবি হাসপাতালে দুজন রোগী মারা গেছেন।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে দুজন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে তিনজন মারা গেছেন। এ ছাড়া পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আইচি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে একজন করে রোগী মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে। সরকারি হিসাবে ঢামেক হাসপাতালে ১১ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গুতে ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সবচেয়ে সংকটাপন্ন রোগীদের ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতাল থেকে এখানে রেফার্ড করা হয়। অধিকাংশ রোগী জটিল অবস্থায় আসেন।
তাদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার সময় পাওয়া যায় না। ক্যান্সারের শেষ ধাপে এ রকম রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে মারা গেছেন। একজন গর্ভবতী নারী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেরা রিভিউ করে দেখেছি এ পর্যন্ত হাসপাতালে মারা যাওয়া ১৮ জন রোগীর মধ্যে ১৭ জনই দেরিতে এসেছেন নয়তো শারীরিক জটিলতা বা দুরারোগ্য ব্যাধি ছিল।
You must log in to post a comment.