
আট মাসে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স
চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে তা কমে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ বা ১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। সদ্য বিদায়ী অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্সের এ ধারা আরও নিম্নগামী। অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। গত আট মাসের মধ্যে এটিই (অক্টোবরের রেমিট্যান্স) প্রবাসীদের পাঠানো এক মাসে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ কোটি ৭২ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭১ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৫০ মার্কিন ডলার।
ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্সের ওপর সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে কোনো কাজ হচ্ছে না, নিম্নগামী হচ্ছে রেমিট্যান্স। তবে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। আশা করা হচ্ছে আগামীতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হবে।
এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে যাওয়া আগের দুই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমে যায় সেপ্টেম্বরে। অক্টোবর মাসে আরও কমলো রেমিট্যান্স। জুলাই মাসে রেমিট্যান্স আসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। তবে সেপ্টেম্বর মাস থেকে রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা লাগে।
২০২১-২২ অর্থবছরের একই মাসে (অক্টোবর) রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বা ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার ১২ কোটি ১৪ লাখ ডলার কম এসেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫৪ কোটি (১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের একই মাসের (সেপ্টেম্বর) চেয়ে তা এক কোটি ৪১ লাখ ডলার কম।
You must log in to post a comment.