
শনিবারের বিএনপি’র গনসমাবেশকে সামনে রেখে বরিশাল সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন
বিএনপি’র শনিবারের গনসমাবেশকে সামনে রেখে শুক্রবার সকাল থেকে বরিশাল অনেকটা করোনাকালের লক ডাউনের রূপ নিয়েছে। পরিবহন মালিকদের আগাম ঘোষিত সড়ক পরিবহন ধর্মঘটের সাথে অঘোষিতভাবে নৌ যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়ায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলই যোগাযোগ শূণ্য হয়ে পড়েছে। বরিশাল মহানগরী সারা দেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। মহানগরীতে এখন শুনশান নিরবতা। নৌ পরিবহন ধর্মঘটের আনুষ্ঠানিক ঘোষনা না আসলেও বুধবার রাত থেকে ভোলা ও বরিশালের মধ্যে স্পীডবোট সহ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যাত্রীবাহী নৌযানও বন্ধ করে দেয়া হয়। শুক্রবার সকালে বরিশালের ১২টি সহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২৫টি রুটেই নৌযান চরলাচল অঘোষিতভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক মুমূর্ষ রোগীকেও হাসপাতারে স্থানন্তর সম্ভব হচ্ছে না।
তবে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই বরিশাল মহানগরীতে বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতা-কর্মী ও সমর্থক পৌছে গেছেন বলে জানা গেছে। নগরীর যে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শনিবার গনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে দিনভর প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীর অবস্থান লক্ষ করা গেলেও রাত বাড়ার সাথে সে সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজারে উন্নীত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত এসব নেতা-কর্মী ও সমর্থকগন বেলপার্কের খোলা আকাশের নিচে রাত্রী যাপন করেন। এদের অনেকেই চুলা ও হাড়ি পাতিল নিয়ে সভাস্থলে অবস্থান করে রান্না করে খাবার তৈরী করে খাচ্ছেন।
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে সারা দেশের সাথে বিচ্ছিন্ন বরিশাল মহানগরীতে ইজিবাইক ও গ্যাস চালিত থ্রী-হুইলার সহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি নগরীতে রিক্সার সংখ্যাও হাতে গোনা। ফলে নিত্য যানযটের এ নগরীতে শুক্রবার সকাল থেকে সে বিড়ম্বনা নেই। নেই ট্রাফিক পুলিশের কোন তৎপড়তাও।
এদিকে বিএনপি’র মিডিয়া সেলের প্রধান সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন জানিয়েছেন, কোন বধা বিঘœ বরিশালের গনসমাবেশকে রুদ্ধ করতে পারবে না। এ গনসমাবেশ মহাসমাবেশর রূপ নেবে বলেও দাবী করেন তিনি। কেন্দ্রীয় নেতা ও যুব দলের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল নিজের শহরে পৌছে শণিবারের গনসমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে জনসংযোগ সহ নানা তৎপড়তায় অংশ নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এবিএম জাহিদ হোসেন পুরো গনসমাবেশ বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেও আওয়ামী লীগ,যুব লীগ ও ছাত্র লীগ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে মিছিল করেছে। তবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল নিয়ে শণিবারের গনসমাবেশের পক্ষে প্রচারনা চালায়।
নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে শণিবার বরিশালে বিভাগীয় গনসমাবেশ চট্টগ্রাম,ময়মনসিংহ,খুলনা ও রংপুরের মত কতটা সফল হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। কারণ বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো অনেকটাই নৌপথ নির্ভর। সড়ক ও নৌযোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকগন কোন পথে কিভাবে সমাবেশস্থলে পৌছবেন তার ওপরই নির্ভর করছে এ গনসমাবেশের সাফল্য। এ মন্তব্য রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের।
You must log in to post a comment.