
ইসাই ও বায়োজেনের ওষুধে বিপজ্জনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আলঝেইমার রোগটি ডিমেনশিয়ার একটি সাধারণ রূপ। এই রোগকে মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগও বলা হয়। আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় একটি ওষুধ তৈরি করেছে জাপানি ওষুধ কোম্পানি ইসাই ও মার্কিন কোম্পানি বায়োজেন। সম্প্রতি লেকানেম্যাব নামের ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম জানায়, আলঝেইমারের ওষুধ লেকানেম্যাব রোগের তীব্রতা কিছুটা ধীর করে দিলেও এর রয়েছে বিপজ্জনক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি। লেকানেম্যাব ওষুধটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর ১২ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীর মস্তিষ্ক ফুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ১৪ শতাংশ রোগীর মস্তিষ্কে মাইক্রোহেমোরেজ দেখা দেয়। এমনকি লেকানেম্যাব গ্রহণকারীদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আর অন্তত পাঁচজন ম্যাক্রোহেমারেজের শিকার হয়েছেন। ১৮ মাসের এই ট্রায়ালে প্রাথমিক পর্যায়ের আলঝেইমারে আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন অংশ নেয়।
লেকানেম্যাব হলো একধরনের অ্যান্টিবডি, যা মস্তিষ্ক থেকে অ্যামিলয়েড দূর করতে ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তায় কাজ করে। আর অ্যামিলয়েড হলো একধরনের প্রোটিন। ধারণা করা হয়, মস্তিষ্কে অ্যামিলয়েড বিটা নামক এই প্রোটিন উৎপন্ন হয়, যা পরে মস্তিষ্কের ভেতর রক্তকণিকায় দলা পাকিয়ে অ্যামিলয়েড ফলক গঠন করে। এই অ্যামিলয়েড ফলকই মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। অর্থাৎ আলঝেইমারের রোগের অন্যতম কারণ।
এদিকে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এফডিএ) শিগগিরই লেকানেম্যাব ওষুধটির অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে। আর আগামী বছর বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ওষুধটির অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে ইসাই ও বায়োজেন।
চিকিৎসকদের মতে, আলঝেইমার একটি প্রগ্রেসিভ নিউরোলজিক রোগ, যেখানে মস্তিষ্কের কোষগুলো আস্তে আস্তে মারা যায়। সাধারণত ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে এই রোগ দেখা দেয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম বয়সীদেরও এই রোগ হতে পারে। আলঝেইমারে আক্রান্তরা প্রথমে সামান্য বিভ্রান্ত হয় এবং অনেক কিছু ভুলে যেতে শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি বা ভাবনার শক্তিকে ধ্বংস করে দেয় রোগটি। ফলে সহজ কাজগুলো করার ক্ষমতাও চলে যায় মানুষের। তবে আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
You must log in to post a comment.